প্রধান উপদেষ্টার কাছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দুই দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন চুক্তির বাতিল আদেশ প্রত্যাহার এবং সর্বোচ্চ আদালতের রায় মোতাবেক কলমিলতা বাজারের ক্ষতিপূরণ প্রদানে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ পালন না করায় সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাগণ, ডিএনসিসির প্রশাসক ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পদত্যাগসহ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের আয়োজন করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পের ভুক্তভোগী জনতা।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে আলহাজ্ব মোহাম্মদ আব্দুর রহিম বলেন, আমরা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার দীর্ঘদিনযাবৎ উল্লেখিত বিষয় দুটির সমাধান চেয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়াসহ দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোনো সমাধান পাইনি। এমতাবস্থায় আমাদের বিষয় দুটির সমাধানের জন্য আবারো অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আব্দুর রহিম আরে বলেন, আমাদের দুটি দাবি বাস্তবায়নে আগামী রবিবার (২৫ মে) বিকেল ৩ ঘটিকায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এই কর্মসূচীতে ছাত্র জনতাসহ সবাইকে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
আব্দুর রহিম বলেন, বাংলাদেশের বস্তিবাসী সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষদের জীবন মানোন্নয়নের জন্য আমরা ১৯৯৭ সাল থেকে আজ অবধি লড়াই সংগ্রাম করে আসছি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ঢাকার ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পটি একটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে ১৯৯৮ সালে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়। এই প্রকল্পটি শতভাগ বিনিয়োগে আমি ও আমাদের প্রতিষ্ঠান এনএসপিডিএল ২০১০ সাল পর্যন্ত চালিয়ে আসে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কালীন সময়ে আওয়ামী সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, কর্নেল (অবঃ) ফারুখ খান ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রিসহ স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীগণ নানাবিধ অপকর্ম লুটপাট ও আমাদেরকে দেশ ছাড়া করে প্রকল্প অবৈধভাবে দখল করে।
তিনি আরো বলেন, ঢাকার বিজয় স্মরণীস্থ কলমিলতা বাজার এর প্রকৃত মালিক আমার বাবা শহিদ আব্দুল কাদের। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আমার বাবা শহীদ হওয়ার সুযোগে ১৯৭২ সালে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অবৈধভাবে জবরদখল করে। এই জবরদখলকে মুক্ত করার জন্য আমরা শহীদ পরিবার হিসেবে তৎকালীন শাসক গোষ্ঠীর দ্বারে দ্বারে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে বিচার বিভাগের কাছে ১৯৭৫ সালে একটি রীট মামলা দায়ের করি।
পরবর্তীতে দীর্ঘদিন আইনি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই সর্বোচ্চ সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। যদিও প্রতিটি আদালত আমাদের এই সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ দুই মাসের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও সরকারকে প্রদান করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বাস্তবতা হচ্ছে এই ৫৩ বছরের যাবতীয় ক্ষতিপূরণ হিসেবে আমাদের পাওনা ৫ হাজার কোটি টাকার অধিক। কিন্তু আজ অবধি সেই ক্ষতিপূরণ আমরা পাইনি।
এসময় মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন, এডভোকেট নূরতাজ আরা ঐশী, বসতিনেত্রী জেসমিন , নুরজাহান বেগম, মেজর আফসারী প্রমুখ।